Min menu

Pages

latest news

Leave your fake attitude! Arif Shahriar । আরিফ শাহরিয়ার ।


 অনেক সময়ই অনেককে দেখি অনেকের সামনে নিজের সত্যিকার আচরণ-ব্যবহার জলাঞ্জলি দয়ে অন্যরকম আচরণ করছে।হঠাৎ করে মনে হয় আমি যেন দুইজন মানুষকে দেখছি...😂এটাই Fake Attitude!!আপনার ব্যক্তিত্ব সকলের সামনেই একই হওয়া চাই।মানুষ ফেইক অ্যাটিটিউড এর বেশ তখনই ব্যবহার করে যখন:-

 ★তাকে কারো সামনে এমনভাবে নিজেকে উপস্থাপন জরুরী মনে করে,যেভাবে না করলে সেই ব্যক্তিটি হয়তো তাকে পাত্তা দিবে না!
★সে একটি ব্যক্তিত্বগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে কারণ সে মনে করছে তার সত্যিকার ব্যক্তিত্বে সমস্যা রয়েছে!
★সে কাউকে অনুসরণ করছে এবং ভাবছে যে সে সেই ব্যক্তিটির মতো হতে পারলে সবাই তার প্রশংসা করবে বা সে বেশ পাত্তা পাবে!
★কারো কাছ থেকে অবহেলিত হয়েছে বলে ব্যক্তিত্যগত পরিবর্তন করে নতুনত্বের দিকে যাচ্ছে!
★কেউ তার ব্যক্তিত্বগত সমস্যা তুলে ধরেছে বিধায় সে সেটি পরিবর্তন করতে চাচ্ছে! এবং এরকম আরো গোটা বিশেক কারণ উপস্থাপন করা যেতে পারে।তবে ফেইক অ্যাটিটিউডের কারণের সম্যক বিশ্লেষণ আমাদের উদ্দেশ্য নয়,সাধারণ ধারণাই যথেষ্ট!

এখন আমি আপনাকে বলছি নিজের ব্যক্তিত্বকে কখনো পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন না!কেন করবেন না?আমি এর উত্তরে ব্যাখ্যায় যাব না,সংক্ষেপে বলছি "বন্যেরা বনে সুন্দর,শিশুরা মাতৃক্রোড়ে"। আমি কী বলতে চাচ্ছি আশা করি বুঝতে পেরেছেন।


নিজের ব্যক্তিত্বগত পরিবর্তনের চেষ্টায় যে ক্ষতিগুলো হতে পারে:-
★আপনি আপনার আপন সত্তা হতে দূরে সরে যাবেন!
★আপনার প্রতিভা কিংবা সহজাত দক্ষতার উপর প্রভাব পরবে!
★আপনার আচরণ জগাখিচুড়ি হয়ে যেতে পারে আর তখন আপনি নিজে এই ব্যক্তিত্ব থেকে প্রকৃত সত্তায় ফিরে আসতে চাইবেন যা আবারও বেশ কষ্টকর!
★আপনি গুটিকয় মানুষের মন যোগানোর জন্য যে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছেন।এরপর দেখবেন তার কয়েকগুণ বেশি মানুষ আপনার থেকে দূরে সরে গিয়েছে কারণ তারা আপনার প্রকৃত ব্যক্তিত্ব পছন্দ করতো!
★আপনার আত্মবিশ্বাস দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে!যদিও আপনার এই পরিবর্তনের কথা মাথায় আসার মানেই আপনার আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রয়ে গিয়েছে...😐 আর বাকিগুলো চিন্তা করে বুঝে নিন!😉!

অনেকে এ পর্যায়ে বলতে পারেন যে আমি বেশি গভীরে চলে যাচ্ছি,আপনি হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য শুধুমাত্র কয়েকজনের সামনে একটু অন্য ব্যক্তিত্বের ভাব ধরেন বৈ আর কিছু নয়।কিন্তু তাতেও সমস্যা রয়ে গিয়েছে।ওই মানুষগুলো যখন আপনার সত্যিকার ব্যক্তিত্বের সামনে আসবে তখন বেশ বড়সড় একটা ধাক্কা খাবে!আর এটা একদিন না একদিন হবেই।তখন কিন্তু আপনাকে তারা বিশ্বাস করবে না যে আপনি প্রকৃত অর্থেই কেমন!?

দেখুন এখন মূল ব্যাখ্যায় আসা যাক...প্রথমেই এই পরিবর্তনের চেষ্টা মানুষ কেন করে তার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়েছিলাম।এবার সেগুলোর যুক্তি খণ্ডন করা যাক যাতে আপনি বুঝতে পারেন যে আপনার আপন ব্যক্তিত্ব কিংবা আচার-ব্যবহারের কোনো পরিবর্তন করা উচিত হবে না!ক্রমানুসারেই আবারো সাজানো হলো-
★আপনার সত্যিকার সত্তা কিংবা ব্যক্তিত্ব যার কাছে ভালো লাগবে না,তার কাছে পাত্তা পাওয়ারও দরকার নেই।মনে রাখবেন ভুল পরিচয়ে কিছুদিন পাত্তা পেলেও কিছুদিন পর রঙ খসে পরে যেতে বেশি সময় লাগার কথা নয়!
★মানুষ কখনো তার ব্যক্তিত্বের সত্যিকার পরিবর্তন করতে পারে না।বরং শুধু শুধু পণ্ডশ্রম করে নিজের হীনম্মন্যতা বৃদ্ধি করতে পারে!আর কারও ব্যক্তিত্বে কখনো কোনো সমস্যা থাকে না,ধরে নিন আপনি যেতাকে সমস্যা বলে চিহ্নিত করছেন সেটা আপনারই একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য!
★প্রত্যেকটি মানুষের বৈশিষ্ট্যেই স্বতন্ত্রতা থাকে।সব মানুষই তাই আলাদা।আর কোনো মানুষই প্রকৃত অর্থে সকল ভালো গুণের অধিকারী হতে পারে না কিংবা তার সেরকম হবার দরকারই পরে না।হুমায়ূন আহমেদ স্যারের একটি কথা স্মরণ করছি,
"আদর্শ মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। আদর্শ মানুষ ডিসটিল্ড ওয়াটারের মতো - স্বাদহীন। সমাজ পছন্দ করে অনাদর্শ মানুষকে। যারা ডিসটিল্ড ওয়াটার নয় - কোকাকোলা ও পেপসির মতো মিষ্টি কিন্তু ঝাঁঝালো।"
তাই কখনো কাওকে অনুসরণ করে নিজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে আঘাত করবেন না।আপনি যেমন,মানুষকে আপনার তেমন রূপটিই দেখানো চাই।আর আপনি তো রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করছেন না!এখানে আবার শেক্সপীয়ারের একটি কথা উক্তি মনে পরলো,
"পৃথিবীটা একটা রঙ্গমঞ্চ, আর আমরা সেখানে অভিনেতা, অভিনেত্রী!"
প্রকৃত অর্থে এখানে আপনাকে একটি জীবনে বিভিন্ন চরিত্রে উপস্থাপন করার কথা বোঝানো হয়েছে।ভিন্ন আচরণগত সত্তা নয়!
 ★দেখুন,যে আপনার প্রকৃত ব্যক্তিত্বকে অবহেলা করে সে প্রকৃত অর্থে আপনাকেই অবহেলা করে,নতুন ব্যক্তিত্ব তৈরি করে তার অবহেলা থেকে মুক্ত হবার চেয়ে যারা আপনাকে সত্যিই কেয়ার করে তাদেরকে সময় দিন।দেখবেন আপনার বন্ধুর অভাব হবে না...!
★আসলে এর সমাধানও উপরেরর পয়েন্টগুলোতেই হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছি...

অনেকে হয়তো ভাবছেন আমি অভ্যাসের কথা বলছি।কিন্তু আমি অভ্যাসের কথা বলছি না।আমি ব্যক্তিত্বের কথা বলছি,তার ব্যবহারের কথা বলছি।অভ্যাস খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি ভালোর দিকে অগ্রসর হতে সাহায্য করে...!কিন্তু প্রকৃত ব্যক্তিত্ত্বে হাত দেওয়া অনুচিত!

এবং পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই কোনো সঙ সেজে কারো বন্ধুত্ব পাবার চেয়ে সবাইকে নিজের প্রকৃত রূপটি দেখিয়ে দিন।তাপর যারা আপনার সাথে থাকবে তাদেরকেই সময় দিন এবং যারা দূরে সরে যাবে তাদের সরে যেতে দিন।আপনাকে কারো ভালো না লাগলে সেতা আপনার ভুল নয়,তার ব্যর্থতা ভেবে এগিয়ে যান।দিনশেষে সকলেই অন্তত প্রকৃত আপনিকে চিনবে, কোনো রঙ্গমঞ্চের ভালো অভিনেতাকে নয়!নিজের সত্তাকে গুরুত্ব দিন!

আমি নিজে উপরের ধারনার সাথে সম্পূর্ণ একাত্ম!আর আমি এখানো কোনোভাবেই আপনাকে মোটিভেট করবার চেষ্টা করি নি,বরং আমার ধারনাটা তুলে ধরলাম।কারো কোনো দ্বিমত থাকলে প্রকাশ করতে ভুলবেন না যেন!😃

Comments