Min menu

Pages

latest news

Bad sides of Facebook !যে কারণে আমার ফেসবুক বিরক্ত লাগে ! আরিফ শাহরিয়ার । Arif Shahriar ।


  • সময় নষ্ট করে: প্রথমেই বলতে হয় যে এটা আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়কে এত সুন্দরভাবে নষ্ট করে দেয় যে একজন ফেসবুক ইউজার তার টেরই পান না।হুট করে দেখেন এক ঘন্টা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে,তারপর যদি চিন্তা করে দেখেন যে এই এক ঘন্টায় আপনি কী গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন,দেখবেন আপনি বুঝবেন যে কীভাবে আপনার সময় অপচয় হয়েছে...

  • মানসিক উদ্বিগ্নতা: ফেসবুক তার ইউজারকে তার অবচেতন মনের ভেতরে সুক্ষ্মভাবে উদ্বিগ্নতা ঢুকিয়ে দেয়।আপনাকে অমুক গালি দিয়েছে,তমুক আপনার ডিপিতে হাহা দিয়েছে,আপনি এখনো কেয়ার রিএক্ট পান নাই,করিম আপনার মেসেজের রিপ্লাই দেয় নাই,রহিম আপনাকে  রোস্ট করেছে আরও যত্তসব ফালতু বিষয়গুলো আপনার অজান্তেই আপনার অবচেতন মনকে উদ্বিগ্ন করে ফেলে এবং আপনি মানসিক অশান্তিতে ভুগতে থাকেন।আর আপনি নিজেও বোঝেন না যে কেন আপনি অন্যদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন আর কেন আপনার মন প্রায়ই ডিপ্রেসড হয়ে যায়!

  • লাইক-কমেন্ট-শেয়ার নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগীতা:এইবার একটা মারাত্মক পয়েন্ট।পোস্টের লাইক,কমেন্ট,শেয়ার নিয়ে প্রতিযোগীতা।অমুকের ডিপিতে ৫০০ লাইক,আপনারটাতে ২০ টা লাইক।এখন আপনাকে অমুক-তমুক সবাইকে মেসেজ দিয়ে বলতেই হবে,"ব্রো,আমার প্রোফাইল পিকচারে গিয়ে একটা লাইক দিয়ে আয় না...আচ্ছা,যাবিই যখন লাভ রিএক্টই দিয়ে আয়।প্লিজ প্লিজ প্লিজ..."😆মানে আমি ঠিক বুঝি না আপনার পোস্টের লাইক,কমেন্ট কিংবা শেয়ার দিয়ে আপনি করবেন টা কী?আর এই সংখ্যাগুলাওকে এত গুরুত্ব দিয়ে আপনার লাভটা কী হচ্ছে?হ্যা যদি আপনি ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে থাকেন তবে ভিন্ন কথা,কিন্তু আমাদের মতো সাধারণদের জন্য এই প্রতিযোগীতামূলক মনোভাব হাস্যকর...


  • বন্ধুত্ব ধ্বংস করে:ফেসবুক বন্ধুত্বকে ধ্বংস করে।এই লাইনটা পড়ার সাথে সাথে কিছু শিক্ষিত পাবলিক পোস্টটি থেকে চলে যাচ্ছে।তারা ভাবতেছে,"হুরু,আমি আরো কত নতুন নতুন জানা-অজানা মানুষকে বন্ধু বানাচ্ছি আর এই মাথামোটা বলতেছে ফেসবুক নাকি বন্ধুত্ব ধ্বংস করে!যত্তসব *****..."😂কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ফেসবুকে সত্যিকার অর্থে বন্ধুত্বের কোনো উন্নতি হয় না!এখানে আপনি উলটা-পালটা যতই বন্ধু বানান না কেন,দিনশেষে আপনার সত্যিকার বন্ধুগুলো আপনার থেকে সময় কম পায়।আপনি যদিও অনলাইনে তাদের সময় দিচ্ছেন কিন্তু অনলাইনে কয়েকঘন্টা সময় কাটানোর থেকে অফলাইনে ৫ মিনিট হাঁটতে হাঁটতে কথা বলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের মনের বাসায় অনেক আবর্জনা এনে নিজেকে সমৃদ্ধশালী মনে না করে সতিকারের কিছু বন্ধু বানান দেখবেন ডিপ্রেশন সব কোথায় যেন চলে গিয়েছে...

  • ভুয়া প্রোফাইল: যখনই আপনি দেখেন যে Angel omuk কিংবা Prince tomuk আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে ,তখনই বোঝেন যে এর পেছনে থার্ড ক্লাস কোনো মুখশ্রীই রয়েছে...এগুলা তো অনেক আগেই আমরা পার করে এসেছি,কিন্তু এখনো অনেকে নিজের প্রোফাইলে উলটাপালটা তথ্য দিয়ে রাখে।একজনের বায়ো না পড়েই কপি পেস্ট করে দেয় নিজের বায়োতে।যে ছেলে জানেই না অরিগ্যামি কিংবা স্ট্যাম্প কালেক্টিং কী তার ইন্টারেস্টও আপনি ফেসবুকে খুজেঁ পাবেন এগুলাই...😐নিজের সম্পর্কে যত ভুয়া রঙ চড়িয়ে উপস্থাপন করা যায় তার সমস্ত প্রচেষ্টাই আপনি খুঁজে পাবেন এই জাদুর বাশকো থুক্কু বাকশোতে...

  • সেলফি আসক্তি: তারপর আসে নিজের ছবি কিংবা সেলফি তোলা আসক্তি।ফেসবুকে নিজের নতুন নতুন ছবি আপলোড না দিলেই কেমন যেন মন খুতখুত করতে থাকে সবার।তাই যেখানেই যান না কেন,নিজের অজান্তেই দেখা যায় ফোনের ক্যামেরা ওপেন হয়ে গিয়েছে আর আপনি সত্যিকার বাস্তব বিষয়গুলো অনুভব করা বাদ দিয়ে সেখানে বসে দীর্ঘ সময় ধরে নিজের ছবি তুলে যাচ্ছেন..
  • .
  • ডিপ্রেশন: দ্বিতীয় পয়েন্টে যে উদ্বিগ্নতার কথা বলেছিলাম তার পরবর্তী ধাপেই ডিপ্রেশন চলে আসে।অথচ আপনি বুঝতেই পারবেন না কেন আপনি ডিপ্রেসড!

  • গুজব ও প্রপাগান্ডা: গুজব আর প্রপাগান্ডায় সবসময়ই মুখর ফেসবুক।আপনি ভিডিও সহ দেখছেন একটি বাসাতে জঙ্গী হামলা হচ্ছে,ঠিকানা আপনার পাশের বাসারই।আপনি দ্রুত বাসা থেকে নেমে গিয়ে দেখবেন হয়তো পাশের বাসার কোনো ছেলে পাবজি খেলছে!মানে গুজব ছড়ানোতে আমরা ক্রিয়েটিভিটির লেভেল পার করে এসেছি অনেক আগে।এখন সত্যিকার খবর আর গুজবের মাঝে তফাৎ করতে আমাদের মতো আমজনতা আর পারে না।তাই হুট করে সব গুজবে হুমরি খেয়ে পরে আমরা বারটা বাজিয়ে দেই দেশের!

  • ভার্চুয়াল রূপ বনাম বাস্তব রূপ: বিশ্বাস করেন,প্রত্যেকটা মানুষের ভার্চুয়াল রূপ আর বাস্তব রূপে আকাশ-পাতাল তফাৎ!প্রত্যেকটা মানুষ ফেসবুকে একটা ফেইক এটিটিউড তুলে ধরায় অত্যন্ত আগ্রহী!আবার,নিজের অজান্তেই ফেসবুকে লগইন করার সাথে সাথে আমাদের আচরণগত একটা মারাত্মক পরিবর্তন হয়ে যায়।আপনি ফেসবুকে পরিচয় কোনো বন্ধুর সাথে বাস্তবে দেখা করলে অবাক হয়ে যাবেন পার্থক্যগুলো দেখে...আর এই পরিবর্তনটা গুটিকয় মানুষের ভেতরে হয় না বরং আমার দেখামতে প্রায় প্রত্যেকতা মানুষই নিজের অজান্তেই ফেসবুকে অনেকতাই অন্যরকম মানুষে পরিণত হয়ে যায়!

  • গুপ্ত বা নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য সংগ্রহ: গুপ্ত সংগঠন কিংবা নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো সবার অগোচরেই খুব সহজেই জাল বিস্তার করে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে ফেসবুকে...!

  • সমালোচনার নামে ভুয়া তথ্য: ফেসবুকে এমন হাজার হাজার সদস্যের হাজার হাজার গ্রুপ রয়েছে যাদের কাজই হলো অন্যদের পঁচানো কিংবা রোস্ট করা!আমি সমালোচনার বিরুদ্ধে কথা বলছি না,সমালোচনা ব্যক্তিবিশেষের উপকারই করে থাকে কিন্তু কিছু মানুষ সমালোচনার নাম করে ঘৃণিত উপায়ে কিছু উলটাপালটা তথ্য উপস্থাপন করে ঘৃণা ছড়ায়।আপনি যে কাজ জীবনেও করেন নি,সেইটাই আপনি কীভাবে করেছেন তার প্রমাণসহ উপস্থাপন করবে কিছু মানুষ আর বলবে তারা সমালোচনা করছে।অথচ সেই তথ্যটি যে সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন সেটা পনি বাকি সবাইকে বোঝাতেও পারবেন না।সবাই ওই ভুয়া তথ্যটি নিয়েই মেতে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।কেউ উপরে উঠতে গেলেই এই মানুষগুলো তাকে টেনে ধরে রেখে তাদের পর্যায়ে রেখে দেবার চেষ্টা করে এই ভুয়া সমালোচনার নামে তার মনোভাব ক্ষুণ্ণ করে দিয়ে!

  • অযথা গালি: কেউ কোনো ভালো কাজ করছে না খারাপ কাজ করছে সেটা না দেখেই একদল শিক্ষিত মানুষ কী-বোর্ড হাতে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে শুরু করে দেয় ফেসবুকে।মানে এসব মানুষের মনোভাব দেখে ঘৃণা হয় আমি নিজেও মানুষ বলে।প্রতিটা ভালো ভালো পোস্টের নিচে এমন অসংখ্য শিক্ষিত মানুষের দেখা পাবেন আপনি নিঃসন্দেহে!

  • ওভার কনফিডেন্টের কারখানা: ফেসবুকে একাউন্ট খুলে কয়েকদিন পদচারণ করলেই যেকোনো ব্যক্তির মূল্য কয়েকশ গুণ বেড়ে যায়।যাকে একটা কল করলেই একসাথে ঘুরতে বের হওয়া যেত,এরপর দেখা যায় কয়েকটা কলেও সেই কাজ হয় না!আর অনেক তথ্য হাতের কাছে একসাথে দেখে সে নিজেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ বলে ভাবতে শুরু করে আর আত্মবিশ্বাসের বালতি উপচে পড়তে থাকে!আর কোন বিষয় সম্পর্কে তার জ্ঞান থাকুক বা না থাকুক সব বিষয় নিয়েই নিজের বিজ্ঞ কমেন্ট কিংবা পোস্ট করতে সে কোনমতেই ভুল করে না!

  • অপিরিচিত মানুষের সাথে বন্ধুত্ব:যে মানুষটি সম্পর্কে আপনি কিছুই জানেন না,শুধু প্রোফাইল দেখেই তার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায়।আর এরপর থেকেই মেসেজ আদান-প্রদানও শুরু হয়ে যায়।আপনি কী রাস্তায় অপরিচিত মানুষদের সাথে গিয়ে বন্ধুত্ব করে কথা বলেন?যদি উত্তর না হয় তবে ফেসবুকে কেন হয় এরকম?অনেক সময় এই বন্ধুত্ব খারাপ না,কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এই বন্ধুত্ব ভালো ফলও দেয় না!

  • খারাপ অভ্যাস পরিবর্তনে অনীহা: যে মানুষের কোনো খারাপ অভ্যাস আছে,তারা খুব দ্রুতই জানতে পারে যে আরো অনেক মানুষেরই ওই অভ্যাসটি রয়েছে।আগে যেখানে সে অভ্যাসটি পরিবর্তনের চেষ্টা করতো,এরপর থেকে সে আর সেই অভ্যাসটি পরিবর্তনের আর চেষ্টা করে না কারণ সে ভাবে যে আরো অনেকেরই তো এটা আছে।তারা তো অভ্যাসটি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে না,তাহলে আমি কেন করবো?এভাবে ধীরে ধীরে পরিমাণ দিয়ে উৎকর্ষতার বিচার শুরু হয়ে যায়!
  •  
  • অমনোযোগীতা:ফেসবুক ব্যবহার করার পর থেকে যেকোন বিষয়ে আপনার সহজাত মনোযোগ দেবার ক্ষমতা কমে যাবে।কমে যাবে আপনার প্রোডাক্টিভিটি!আপনি ফেসবুকের প্রতি একটা টান অনুভব করবেন আর যেকোন কাজ করার সময়ই মনে হবে যে একটু ফেসবুকটা চেক করে আসি...!এভাবে কমে যাবে আপনার দৈনিক কাজ করবার হার!

  • নোটিফিকেশন আসক্তি:সবসময়ই আপনার মনে হবে যে এখন একটু ফেসবুক চেক করা উচিত,হয়তো কোনো নতুন নোটিফিকেশন এসেছে।আমার পোস্টে দেখি কয়জন লাইক দিয়েছে,কেউ কিছু কমেন্ট করেছে কিনা।একসময় এমন হবে যে আপনার হঠাৎ হঠাৎ মনে হবে যে ফোন থেকে নোটিফিকেশন আসার সাউন্ড হয়েছে কিন্তু ফেসবুক ওপেন করে দেখবেন কোনো নোটিফিকেশন নেই!শ্রুতিবিভ্রম!

  • শারীরিক সমস্যা:সারাক্ষণ ফেসবুক ইউজ করার ফলে চোখের কী ক্ষতি করছেন ভেবে দেখেন কী?আর সারাক্ষণ স্ক্রিনের দিকে চেয়ে থেকে থেকে শরীরের আর কী বারটা বাজিয়েছেন বাকিগুলো নিজেই বরং খুজে দেখুন,তাহলে ভয়াবহতা টের পাবেন নিজেই!আমি বলে দিলে আর চেক করবার অবকাশ হয়তো হতো না...

  • লিংক ব্লকিং:আমার জন্য এইটা সবচেয়ে বড় সমস্যা।আমার পার্সোনাল ব্লগের কোনো লিংক শেয়ার করলেই তা কিছুদিনের মাঝেই ব্লক হয়ে যায়।এর আগেও বেশ কয়েকটা ব্লগে এরকম হয়েছে।মানে আমার পার্সোনাল পেইজে ব্লগের লিংক শেয়ার করলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এত মাথাব্যাথা কেন বুঝি না!ভাল্লাগে না...!😡😡

বিঃদ্রঃকোনো পয়েন্টের সাথে দ্বিমত পোষণ করলে জানাবেন।ধন্যবাদ!


Comments