Min menu

Pages

latest news

অনাকাঙ্খিত মোটিভেশন-আরিফ শাহরিয়ার



এইযে সারাদিন শুধু শুনি,’’পাশের বাড়ির হাবলু গোল্ডেন পেল আর তুই এখানে আষ্ট বিষয়ে ফেল করে বসে আছিস!’’
আর এটা নিয়ে ভাবতে গেলে দুটো কারণ প্রথমত মাথায় আসে।–
১.আমার মেধা নাই(কিছুই বুঝতে পারি না)
২.আমার মুখস্তবিদ্যা ভালো না(কিছুই মনে রাখতে পারি না)
অথচ ভালো ফলাফল করতে গেলে দুটো বিষয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ।মানুষ তার স্বভাব বা বুদ্ধিমত্তার খুবই কম অংশ পেয়ে থাকে নিজ জিন থেকে,অপর দিকে বাকি একটা বড় অংশই তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা আর আপন ইচ্ছার উপর নির্ভর করেই তৈরি
দেখুন,আমি মোটিভেশন করতে বসি নাই,আমি বলছি যাতে একটু বুঝে আমরা একটু ভালো করতে পারি।আমি বিশ্বাস করি,পৃথিবীর সবাই মেধাবী।স্বয়ং আইনস্টাইন বলেছেন,''I have no special talent, I am only passionately curious.''
প্রথমত আমাদের কেন মনে হয় আমাদের মেধা নেই?কারণ আমরা সেটা বুঝি না বা বুঝতে চাই না।বা,আমরা সেটা ব্যাবহার করতে চাচ্ছি না।এখানে অনেকে বলে মরিচা ধরা দাঁ-বটি ব্যবহার করে তারপরে সেই মরিচা বা বাধা দূর করতে তাকে বারবার ব্যবহার করতে হয়।ব্যাপারটা অনেকটা তার মতোই।আমি আবারো বলি যে,আমি বিশ্বাস করি যে রাস্তার পাশের ঝুলি হাতে বসে থাকা ছেলেটা থেকে বিশ্বের সকল মানুষ মেধাবী।কারও বর্তমানে মাথা বেশি কার্যকর,আর কারও একটু কম কাজ করছে।তার কারণ কিন্তু কম যুক্তিবাদি হওয়া!আর যুক্তির বিষয় হচ্ছে গনিত।আমাদের আরও বেশি করে গণিত নিয়ে ভাবতে হবে।আচ্ছা এখন একটা সমস্যা সমাধান করা যাক,আচ্ছা বলুন তো জ্যামিতির বর্গক্ষেত্র দিয়ে কিভাবে (a+b)^2=a^2+2ab+b^2 সূত্রটি কিভাবে প্রমাণ করা যায়?ভাবতে থাকো...

আমি বিশ্বাস করি বাঙালিরা হলো মাল্টিব্রিলিয়ান্ট।তার উদাহরণ নিশ্চয়ই আমাকে দিতে হবে না!আমি নিজের মতো করে নিচে বাঙালিদের কিছু সমস্যা উল্লেখ করার চেষ্টা করছি...
১.সুস্থ চিন্তা করতে পারে না
২.চিন্তার গভীরে গেলে সব এলোমেলো হয়ে যায়
৩.খাল কেটে কুমির আনা স্বভাব
৪.দুই অক্ষর শিখে চার অক্ষর শেখার মতো ভাব ধরা
৫.সব থেকে বড় সমস্যা নিজেকে বড় মনে করা
৬.ভালো কিছু সহ্য হয় না
৭.অল্পতেই তুষ্ট।বেশি জ্ঞান লাভ করতে চায় না।একটু হলেই ভারি বলে পালিয়ে যায়।...ইত্যাদি।
এখন সমাধান কীভাবে করা যায় এই সমস্যাগুলোর?
আসুন,সমাধানের চেষ্টা খানিকটা করে দেখি...
১.সুস্থ চিন্তা করার জন্য অসুস্থ চিন্তা বাদ দিতে হবে।অসুস্থ চিন্তা বাদ দিতে হবে।অসুস্থ চিন্তা বাদ দিতে আর কী কী বাদ দিতে হবে,তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো।তুমি নিজেই জানো তোমার চিন্তার জগতে বিশেষ কোন অপ্রয়োজনীয় বিষয় বেশি সমস্যা করছে,তা জাস্ট ছেটে ফেলে দিন।
২.গভীর চিন্তা করতে শিখতে হবে।এটি করতে গেলে সবথেকে কার্যকরী উপায় হচ্ছে গণিত।গণিতের বিভিন্ন সমস্যা বানিয়ে তার সমাধান করতে চেষ্টা করো।মনে মনে সব ক্যালকুলেশন করতে চেষ্টা করো।আজ থেকে ক্যালকুলেটর এর সাথে বন্ধুত্ব ত্যাগ করুন।আর,বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন থিসিস পড়ে তা সর্বাত্মকভাবে বোঝার চেষ্টা করুন।
৩.খাল কেটে কুমির আনা স্বভাব-এটা সময় অপচয় করার অর্থে বোঝানো হয়েছে।মষতিষ্ককে লখ্যের দিকে নিযুক্ত করতে হবে।পাশের বাড়ির হাবলু কি করছে তার দিকে তোমার মন দেবার কোন দরকার নেই।তোমার ঘরের থেকে চুরি হলেও তার দিকে মন দেবে না যখন তোমার হাতে অন্য কোন কাজ আছে।তবে তুমি ডাকাতি করতে পারো-আইনস্টাইনের মাথা খালি করে সব বুদ্ধি নিজের মাথায় নিয়ে নাও।নিজ কাজের দিকে মনোযোগ দিতে শিখুন।সময় নষ্ট করা চলবে না।
৪.দেখুন আমার জানা মতে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৭০০ কোটি।শতকরা দুইজন ও যদি জ্ঞানী হয় তবে আপনার মত বুদ্ধিমান আছে কম করে হলেও ১৪ কোটি।ভাবতে পারছেন?১৪ এর পর সাত সাতটা শূন্য!আপনি খুব বেশি জানেন,তবে তা দেখানোর কি আছে?নাহয় অগোচরেই কাজ করে যান,সবাই তখন আপনাকে টর্চলাইট ধরে দেখতে আসবে,তা আপনি যত গহীন বনেই থাকেন না কেন!ভুলে যাবেন না,সামনে আপনার অনেক বিশাল পথ,জাতি আপনার থেকে খানিকটা হলেও কিছু আশা করে...
৫.আপনি অনেক প্রতিভাবান?নিজের প্রতিভা নিয়ে বড়াই না করে,পারলে দেখিয়ে দিন আপনার প্রতিভা।হাবলুর কাছে প্রমান করে কী হবে যে আপনি প্রতিভাবান?বিশ্বকে দেখিয়ে দিন না...আর পড়াশোনা চালিয়ে যান ভালোমতো,কারন আইনস্টাইন বা নিউটনের যুগে হয়তো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও অনেক কিছু করা যেত,কিন্তু এখন আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তা সম্ভব না।চেষ্টা চালিয়ে যান,সফলতা ধরা দিবেই হাতের মুঠোয়...
৬.আর আপনি অন্যের সফলতা দেখে জ্বলছেন কেন?সে সফল হয়েছে,এটা আপনার ব্যররথতা,তার দূর্বলতা নয়।পারলে দেখিয়ে দিন আপনিও পারেন।তাকে টপকায়ে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করেই দেখুন কি হয়...
৭.আর কিছু বাঙালি দেখা যায়,তারা খানিকটা শিখেই খাতা কলম হাতে দৌড়ে পালায়।যদিও বাচ্চাদের উপমা দিলাম।কিন্তু এ কিন্তু মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়।আপনার চেষ্টা থাকতে হবে জ্ঞান্ররজনের।খালি উপার্জন যদি ইচ্ছা থাকে,তবেই মানুষ খানিকটা শিখেই শিক্ষাকে ইস্তফা দিয়ে দেয়।কিন্তু আপনার লক্ষ
থাকতে হবে শুধু জ্ঞানর্জন,অন্য কিছু না।তবেই সাফল্যর সাক্ষাত পাবেন...
এবার আসি আপনার সেই বিখ্যাত মুখস্তবিদ্যার বিষয় নিয়ে...
বলতে পারেন শেষ কবে কিছু আত্মস্থ করেছেন?উত্তর দিয়ে নিজের লজ্জা পাবার কোন দরকারই নেই।চুপ করে টিপসগুলো দেখে কেটে পরুন...
১.কবিতার প্রতি ভালোবাসা নিয়ে আসুন।বিখ্যাত কিছু কবিতার দু-চার লাইন বা পারলে সম্পূর্ণ মাঝে মাঝে মনে মনে পড়বেন।
২.গাধার মতো মুখস্ত না করে কৌশলের অবলম্বনে মুখস্ত করতে শিখুন।কাজে লাগবে...
৩.বাসার সবার ফোন নম্বর মুখস্ত রাখতে হবে।পারলে বন্ধুদেরটাও করে ফেলতে পারেন।
৪.আনুষ্ঠানিক বিতর্ক এ ক্ষেত্রে আপনার মস্তিষ্ক শক্তিশালী করতে কাজে আসতে পারে।চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
৫.আর যাদের মুখস্তবিদ্যা ভাল,তারা কিন্তু গাধা না।এটা তাদের একটা খুবই ভালো যোগ্যতা,যা আপনার বা আমার নেই।তাই,Don’t ignore and insult them.
৬.আবার...গাধার মত মুখস্ত করবেন না।গাধার মতো মুখস্ত করে ঘাস কাটা বাদ দিয়ে তা অন্য কোন কাজে লাগাতে কিন্তু পারবেন না।বোঝার দক্ষতা বাড়াতে হবে,তবে আপনি যেহেতু ধৈর্য ধরে এতক্ষন এটি পড়লেন তার মানে আপনার বোঝার দক্ষতা বা জানার আগ্রহ কোন অংশেই কম নয়।জাতি আপনার কাছে আশাবাদী।এগিয়ে যান...
কোন কাজে লাগলো কি?জনাবেন কিন্তু...
আমিও একটু ফাঁকে বিদ্রোহী কবিতাটা পড়ে নেই।আপনিও চাইলে পড়তে পারেন।
‘’বল বীর-
বল উন্নত মম শীর
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর – ...

Comments