'নিকৃষ্ট আর্তনাদ'-নাফিউর রহমান।
আছে বড়জোর মোর এক অতিক্ষুদ্র ঘর,
আর সবই গেছে ঋণে!
বিদীর্ণ ধরার আপনারি এ করুণ সংসার-
কেমন করিয়া লইবো টেনে!
রক্তশূন্য মুখের অতল গহীনে-
চাহিয়া থাকি আমি;
আমারই লাগি নেই যে কোনো কাজ'ই!
খুঁজয়া ফিরিয়া দেখি লোকেদেরও কাছে,
থাকে যদি কোনো কাজ তাহাদেরও হাতে।
এমনি ক্ষণে আমারই খোঁজে-
আসিলো এক তরুণ যুবকে;
বাহির হইয়া আমি চাহিয়া দেখি,
আগন্তুক বসিয়া উঠোনোর বেঞ্চিতে।
প্রণাম করিয়া আমায়, প্রস্তাব দেয়-
ভূ-পতির জমিতে কাজ করিবার;
ভাবিয়া দেখি আমি,স্বামীহারা এ জীবনে-
নেই যে কিছুই সন্তান বিনে!
ও'কে বড় করিবার লাগি কহিলাম তাই আমি-
‘ধন্য তোমায়; প্রস্তাবে আমি রাজি।'
পরদিন ভরা রোদ্দুপুরে পৌঁছুলুম রাজার নিকট,
আমায় দেখি অদ্ভুত হাসি দিয়া রাজায় কয়-
‘তোমার কাজ রাত্রিতে ক্ষেতে।'
ভাবিলাম আমি কেনইবা রাত্রিনাগাদ কাজ করাইবার-
রাজার হইলো সাধ!!
সন্তানের লাগি বেশি না ভাবি,
ওরে লইয়া নিশিতেই আসি।
বাবু দেখিয়া আমায় সকলেরই দেয় বিদায়-
তার কক্ষ হইতে,
ঘাটিলো না কিছুই আমার এই ঘটে!
পরক্ষণেই রক্ষীদের নির্দেশ দেয় আমায় বেঁধে দিতে!!
খোকাকে ছিনিয়া তুলিয়া দিলো অন্যজনার হাতে!
কাঁদিয়া উঠিয়া আমি কহিলাম তারে-
‘ফিরায়ে দিন আমার সোনারে।'
শুনিয়া রাজা আমায় কয়-
‘মিটাইতে পারিলে মোর স্বাদ, ফিরিয়া পাইবে তোমার সব।'
উপায় না দেখি অশেষ ক্ষোভে গেলাম তাহার সনে,
কক্ষে লইয়া ফটক রুখিয়া,
বানালো তাহার ‘ভোগ্যপণ্যে' মোরে!!
দীর্ঘক্ষণ পরে বিদীর্ণ দেহে,
বাহির হই আমি ছেঁড়া কাপড়ে!
নিকটে আসিয়া কহিলেন তিনি-
‘হয়না যেন কোনো জানাজানি।'
ফিরিয়া পাই আমি ছোট্ট সোনাকে;
নীরব ক্ষোভে নিশ্চুপভাবে কাঁদিয়া কাঁদিয়া বাহির হই!!
এমনিভাবে মাঝরাতের আধারের পশুদের মুখ হয়ে গেলো মোর চেনা,
গরিব-স্বামীহীনা বলে ইজ্জতের নেইকো কোনো ঠিকানা!!!
আধারের শেঁয়ালও যেন ধিক্কার জানাচ্ছে মোরে,
হতাশ হইয়া ভাবি-
অন্ধকারে আমারই মতো কত নারী হইয়াছে ইজ্জতহারি!
সমাজের তথাকথিত লোকেদের কটাক্ষের ভয়ে,
লজ্জিত চিত্ত আর নোংরা কূ-শরীর লইয়া-
সেইরাতেই আমি এই নীরস পৃথিবীর নিকৃষ্ট পশুত্বের থেকে-
নীরব অভিমানে চিরতরে বিদায় নিয়ে চলে যাই।
আমিই সেই কলঙ্কিনী, আমিই সেই অপয়া দেহ ব্যাবসায়ী;
আমিই নাকি পতিতালয়ের উগ্র চরিত্রা!!!
-16 November,2018
Contact:
Whatsapp: +8801311255604
E-mail: nafiurrahman2005@gmail.com
Facebook: Nafiur Rahman
Instagram: n.a_f.i_u.r
Comments
Post a Comment