প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো। এ-সব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে বৃক্ষের আড়ালে সরে যায়- বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে শুধু মুখ টিপে হাসে। প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হয়ে কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা- সূর্য্যকেও পর্দা করে এসব রমণী।
অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে- আমি তার সুরকার- তার রক্তে স্বরলিপি লিখি।
মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয় মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে-ঝিয়ে খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো, অস্ফুট গোলাপ-কলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে কার কী বা আসে যায়। বিপন্ন বিস্ময়ে কোরানের বাঁকা-বাঁকা পবিত্র হরফ বোবা হয়ে চেয়ে দ্যাখে লম্পটের ক্ষুধা, মায়ের স্নেহার্ত দেহ ঢেকে রাখে পশুদের পাপ। পোষা বেড়ালের বাচ্চা চেয়ে-চেয়ে নিবিড় আদর সারারাত কেঁদেছিলো তাহাদের লাশের ওপর।
এদেশে যে ঈশ্বর আছেন তিনি নাকি অন্ধ আর বোবা এই বলে তিন কোটি মহিলারা বেচারাকে গালাগালি করে।
জনাব ফ্রয়েড, এমন কি খোয়াবেও প্রেমিকারা আসে না সহজ পায়ে চপল চরণে। জনাব ফ্রয়েড, মহিলারা কামুকের, প্রেমিকের, শৃঙ্গারের সংজ্ঞা ভুলে গ্যাছে। রকেটের প্রেমে পড়ে ঝরে গ্যাছে ভিক্টোরিয়া পার্কের গীর্জার ঘড়ি, মুসল্লীর সেজদায় আনত মাথা নিরপেক্ষ বুলেটের অন্তিম আজানে স্থবির হয়েছে। বুদ্ধের ক্ষমার মূর্তি ভাঁড়ের মতন ভ্যাবাচেকা খেয়ে পরে আছে, তাঁর মাথার ওপরে এক ডজন শকুন মৈত্রী মৈত্রী করে হয়তো বা উঠেছিলো কেঁদে।
Comments
Post a Comment