বারবারা-আসাদ চৌধুরী
ভিয়েতনামের ওপর তোমার অনুভূতির তরজমা আমি পড়েছি –তোমার হৃদয়ের সুবাতাস
আমার গিলে –করা পান্জাবিকে মিছিলে নামিয়েছিলো
প্রাচ্যের নির্যাতিত মানুষগুলোর জন্যে অসীম দরদ ছিল সে লেখায়
আমি তোমার ওই একটি লেখাই পড়েছি
আশীর্বাদ করেছিলাম,তোমার সোনার দোয়াত –কলম হোক ।
আমার বড় জানতে ইচ্ছা করে বারবারা,তুমি এখন কেমন আছ ?
নিশ্চয়ই তুমি ডেট করা শিখে গেছ ।
গাউনের রং আর হ্যাট নিয়ে চায়ের টেবিলে মার সঙ্গে ঝগড়া হয় ?
অনভ্যস্ত ব্রেসিয়ারের নীচে তোমার হৃদয়কে কি চিরদিন ঢেকে দিলে ।
আমার ভীষন জানতে ইচ্ছা করে বারবারা ।
তোমাদের কাগজে নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খাঁর ছবি ছাপা হয় –
বিবেকের বোতামগুলো খুলে হৃদয় দিয়ে দেখ
ওটা একটা জল্লাদের ছবি
পনের লক্ষ নিরস্ত্র লোককে ঠান্ডা মাথায় সে হত্যা করেছে
মানুষের কষ্টার্জিত সভ্যতাকে সে গলা টিপে হত্যা করেছে
অদ্ভূত জাদুকরকে দেখ
বিংশ শতাব্দীকে সে কৌশলে টেনে হিঁচড়ে মধ্যযুগে নিয়ে যায় ।
দেশলাইর বাক্সর মতো সহজে ভাঙে
গ্রন্হাগার,উপাসনালয়,ছাত্রাবাস,
মানুষের সাধ্যমতো ঘরবাড়ি
সাত কোটি মানুষের আকাহ্মিত স্বপ্নের ফুলকে সে বুটজুতোয়
থেঁতলে দেয়
টু উইমেন ছবিটা দেখেছ বারবারা ?
গির্জায় ধর্ষিতা সোফিয়া লরেনকে দেখে নিশ্চয়ই কেঁদেছিলে
আমি কাঁদি নি,বুকটা শুধু খাঁ খাঁ করছিল –
সোফিয়া লরেনকে পাঠিয়ে দিও – বাংলাদেশে
তিরি হাজার রমনীর নির্মম অভিজ্ঞতা শুনে
তিনি শিউরে উঠতেন ।
অভিধান থেকে নয়
আশি লক্ষ শরনার্থীর কাছে জেনে নাও,নির্বাসনের অর্থ কী ?
জর্জ ওয়াশিংটনের ছবিঅলা ডাকটিকেটে খোঁখ থাকবে না স্বাধীনতার
আমাদের মুক্তিযোদ্ধার কাছে এসো -
সাধু এ্যাবের মর্মর মূর্তিকে গনতন্ত্র ও মানবতার জন্যে
মালীর ঘমে ভেজা ফুলের তোড়া দিও না –
নিহত লোকটি লজ্জায় ঘৃনায় আবার আত্হত্যা করবে ।
বারবারা এসো,
রবিশন্করের সুরে সুরে মুমুর্ষ মানবতাকে পাই
বিবেকের জং-ধরা দরজায় প্রবল করাঘাত করি
অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই,সংগঠিত হই
জল্লাদের শানিত অস্র
সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
সঙ্গীত ও চিত্রকলাকে ধংস করার পূর্বে
ছাত্রপত্রহীন সূর্যকিরনে বিষাক্ত করার পূর্বে
এসো বারবারা,বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে ।
Comments
Post a Comment